ইতিহাস
ভারত বিভাজনের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে সর্বপ্রথম যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের পরিদপ্তর স্থাপিত হয়। তখন ভারতের কলকাতা থেকে প্রাপ্ত কোম্পানি, পেশাদার সংগঠন ও অংশীদারী কারবারের কিছু নথিপত্র নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬২ সালে এর কার্যালয় ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।বর্তমানে আরজেএসসি’র অধীনে ১ লক্ষ ৯০ হাজার প্রতিষ্ঠান (জুন, ২০১৫ পর্যন্ত) নিবন্ধিত রয়েছে।
মিশন -ভিশন
যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধক (আরজেএসসি) হল বাংলাদেশ সরকারের একমাত্র অফিস যা বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কোম্পানি ও অন্যন্য প্রতিষ্ঠান গঠনের সুবিধা প্রদান করে এবং এর মালিকানা সম্পর্কিত সকল নথিপত্র সংরক্ষণ করে।
নিবন্ধক হলেন যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা।
আরজেএসসি নিম্নোক্ত ধরনের প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করেঃ
(ক) পাবলিক কোম্পানি
(খ) প্রাইভেট কোম্পানি
(গ) বিদেশি কোম্পানি
(ঘ) ট্রেড অরগানাইজেশন (বাণিজ্য সংগঠন)
(ঙ) সোসাইটি (সমিতি), এবং
(চ) পার্টনারশিপ ফার্ম (অংশীদারী কারবার)
আরজেএসসি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন প্রদান করে এবং প্রযোজ্য আইনের বিধি মোতাবেক পরিচালনা নিশ্চিত করে। প্রযোজ্য আইনসমূহ নিন্মরুপঃ
(ক) কোম্পানি ও বাণিজ্য সংগঠনঃ কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ (কোম্পানি আইন, ১৯১৩ এর সংশোধনী)
(খ) সোসাইটিঃ সোসাইটিজ রেজিষ্ট্রেশন অ্যাক্ট, ১৮৬০
(গ) অংশীদারী কারবারঃ অংশীদারী কারবার আইন, ১৯৩২।
আরজেএসসি'র কার্যাবলি
আরজেএসির কার্যাবলি হল-
(ক) সংশ্লিষ্ট কোম্পানি আইন ১৯৯৪, সমিতি আইন ১৮৬০ এবং অংশীদারী কারবার আইন ১৯৩২ এর অধীনে যথাক্রমে কোম্পানি (পেশাদার সংগঠনসহ), সমিতি ও অংশীদারী কারবারের নিবন্ধন করা।
(খ) নিবন্ধিত কোম্পানি (পেশাদার সংগঠনসহ), সমিতি ও অংশীদারী কারবারের প্রযোজ্য আইনের বিধি মোতাবেক পরিচালনা নিশ্চিত করা।
আরজেএসসির সামগ্রিক কার্যাবলিকে নিন্মোক্ত ধাপসমূহে ভাগ করা হয়েছেঃ
(ক) নামের ছাড়পত্র (Name Clearance)
কোন নতুন কোম্পানি (বিদেশি কোম্পানি ব্যতীত), সমিতি অথবা পেশাদার সংগঠনের নিবন্ধনের পূর্বশর্ত হল নামের ছাড়পত্র নেয়া। উদ্যোক্তাগণ নতুন নিবন্ধনের জন্যে নামের ছাড়পত্র নিতে আরজেএসসি বরাবর আবেদন করেন এবং ইতোমধ্য নিবন্ধিত, ছাড়পত্রপ্রাপ্ত বা আবেদনকৃত কোন নামের সাথে মিলে না যায় বা অনুরুপ না হয় এমন শর্ত বিবেচনায় আরজেএসসি প্রস্তাবিত নামসমূহের মধ্য থেকে যেকোনো একটি নামের জন্য ছাড়পত্র প্রদান করে।
(খ) নিবন্ধন (Registration)
উদ্যোক্তাগণ নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন এবং প্রযোজ্য আইনের শর্ত পূরণ ও নির্ধারিত ফি পাওয়া সাপেক্ষে আরজেএসসি নিবন্ধনপত্র প্রদান করে।
(গ) রিটার্ন ফাইলিং (Returns Filing)
নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানসমূহকে যথাযথ ফরমে ও নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন ফাইল করতে হয় এবং আরজেএসসি সেগুলোর অনুমোদন ও তার রেকর্ড সংরক্ষণ করে থাকে। দুই ধরনের রিটার্ন আছে- বার্ষিক রিটার্ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক যেকোনো পরিবর্তনের জন্য রিটার্ন।
(ঘ) প্রত্যায়িত অনুলিপি প্রদান (Issuance of certified copies)
কোন প্রতিষ্ঠানের রেকর্ডের প্রত্যায়িত অনুলিপির জন্য যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারেন। এমন আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্ধারিত ফি পাওয়া সাপেক্ষে আরজেএসসি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অতীত রেকর্ডের প্রত্যায়িত অনুলিপি প্রদান করে থাকে। তবে লাভ ও ক্ষতির হিসাব শুধুমাত্র ঐ প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট অনুমোদিত ব্যক্তির কাছেই প্রকাশ করা হয়।
(ঙ) উইন্ডিং আপ (Winding up)
যদি কোনো প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছায় অথবা আদালতের আদেশ বা প্রতিষ্ঠানের স্মারক অনুসারে নিবন্ধন বাতিল করতে চায় এবং এই সংক্রান্ত সকল নথিপত্রসহ আবেদন করে তখন আরজেএসসি উইন্ডিং আপ প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন বাতিল করে।
(চ) স্ট্রাক অফ (Struck off)
যদি কোন প্রতিষ্ঠান আর চলমান না থাকে তবে আরজেএসসি বিধি মোতাবেক সেটির নাম নিবন্ধন বই থেকে কেটে দেয়।
No comments:
Post a Comment